বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ রক্তের গ্রুপের জন্য সন্তানের বিভিন্ন রোগ যেমন- বর্ণান্ধ এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। তাই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধের পূর্বে স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জেনে নিলে এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
রক্তের গ্রুপ/Rh ফ্যাক্টরের গুরুত্বঃ
বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন সংক্রান্তঃ
বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে রক্তের Rh ফ্যাক্টর বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। Rh ফ্যাক্টরের জন্য দায়ী জিন প্রকট (প্রকট=যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়) হিসেবে প্রকাশিত হয়। তাই Rh(-) প্রচ্ছন্ন (প্রচ্ছন্ন = যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় না) বৈশিষ্ট্য।
- মাতা Rh(-) এবং পিতা হোমোজাইগাস Rh(+) হলে সকল সন্তান-সন্ততির রক্ত Rh(+) হয়। **(হোমোজাইগাস = দুটি প্রকট জিন একসঙ্গে/দুটি প্রচ্ছন্ন জিন একসঙ্গে)
- মাতা Rh(-) এবং পিতা হেটারোজাইগাস হলে অর্ধেক সন্তান-সন্ততি Rh(+) এবং বাকি অর্ধেক Rh(-) হয়। **(হেটারোজাইগাস = একটি প্রকট ও একটি প্রচ্ছন্ন জিন একসঙ্গে)
Rh(+) সন্তানের রক্ত গর্ভাবস্থায় Rh(-) মাতার শরীরে প্রবেশ করলে মাতার রক্তে অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয়। মাতার এই অ্যান্টিবডি পরবর্তী গর্ভস্থ সন্তানের দেহে প্রবেশ করে ভ্রূণের লোহিত কণিকা নষ্ট করে দেয় অর্থাৎ হিমোলাইসিস ঘটায়। এতে ভ্রূণের মৃত্যু ঘটতে পারে। এই অবস্থাকে ইরাইথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস (Erythroblastosis foetalis) বলে। প্রথমবার গর্ভধারণে যথেষ্ট মাত্রায় অ্যান্টিবডি উৎপন্ন না হওয়ায় শিশুর কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু পরবর্তীতে যথেষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হওয়ায় সন্তান-সন্ততির ভ্রূণাবস্থায় মৃত্যুও হতে পারে।
রক্তের আদান-প্রদান সংক্রান্তঃ
কোন ব্যক্তির দেহে রক্ত সঞ্চালনের (Blood transtusion) সময় দাতা-গ্রহীতা উভয়ের Rh ফ্যাক্টর পরীক্ষা করে দেখা হয়। কারণ Rh(-) ব্যক্তির দেহে Rh(+) রক্ত প্রবেশ করানো হলে গ্রহীতার সিরামে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। পরে যদি কোন সময় ঐ গ্রহীতার Rh(-) দেহে Rh(+) রক্ত প্রবেশ করানো হয় তবে Rh(+) রক্তের কণিকাগুলো জটবদ্ধ বা দলাবদ্ধ হয়ে যায় এবং এতে রক্ত গ্রহীতার মৃত্যু হতে পারে। অন্যান্য ধরনের রক্ত আদান-প্রদানে এ ঝুঁকি থাকে না।