মৌমাছি কীভাবে বুঝতে পারে কোন গাছে মধু পাওয়া যাবে?

মৌ-উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যঃ মৌ-উদ্ভিদগুলোর বিশেষ কিছু চরিত্র রয়েছে, যা বিশ্লেষণ করে তাদের শনাক্ত করা যায়। চরিত্রগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-

  • ফুলগুলো মধ্যকার হবে;
  • দলমণ্ডল সার্বিকভাবে আকর্ষণীয় হবে;
  • ফুলের স্বাভাবিক রঙ উজ্জ্বল থাকবে বা সাদা হবে;
  • ফুলের রঙ লাল ছাড়া যে কোনো বর্ণের হবে;
  • ফুল মিষ্টি সুগন্ধ ছড়াবে;
  • ফুলে পুষ্পরস থাকবে;
  • পরাগকণা অমসৃণ হবে;
  • পরাগকণার গায়ে পোলেনকিট বস্তু থাকবে;
  • রাত শেষে ফুল ফুটবে;
  • এবং ফুলের গঠনাকৃতি মৌমাছির বসার সুবিধা এবং ভিতর থেকে পুষ্পরস সংগ্রহের কাঠামোগত সুবিধা।

উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে দেখা যাচ্ছে যে, মৌমাছির সঙ্গে বিশেষ প্রকৃতির পুষ্প তথা উদ্ভিদের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ নিবিড়। এদের উপস্থিতির সঙ্গে মৌমাছির জীবন ধারণ, বংশবিস্তার এবং অস্তিত্ব নির্ভর করে। সাধারণ বাটার-কাপ আকৃতির পুষ্পকে মুক্ত বা সাধারণ সুবিধাপ্রাপ্ত পুষ্প বলে। এসব ফুলগুলো শুধু মৌমাছিকেই আকৃষ্ট করে না, অন্যান্য খাটো জিহ্বা বা শুঁড়বিশিষ্ট কীটপতঙ্গকেও সহজে আকৃষ্ট করে। অপরদিকে নলাকৃতিযুক্ত দলমণ্ডল বিশিষ্ট পুষ্পগুলো বেশি পুষ্পরস উৎপাদক কিন্তু মৌমাছির ক্ষেত্রে তা বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে না। কারণ তাদের জিহ্বা তুলনামূলকভাবে খাটো হওয়ায় নলাকার দলমণ্ডলগুলোর গভীরে প্রবেশ করতে পারে না।

পুষ্পরস ও পরাগকণা সংগ্রহ করতে হলে কর্মী মৌমাছিকে পুষ্পের গঠনাকৃতি-প্রকৃতি শিখে নিতে হয়। যখন তারা কোনো একটি মৌ-পুষ্পকে শনাক্ত করে তখন দেখা গেছে যে, পরবর্তী চিহ্নিত পুষ্পটিও একই প্রজাতিরভুক্ত হয়ে থাকে। কারণ পুষ্পের গঠন প্রকৃতিও একই রকম হয়। এভাবে যতক্ষণ পর্যন্ত এরূপ একটি প্রজাতির উদ্ভিদ খাদ্যরূপে পাওয়া যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার উপর অভ্যস্ত হয়ে যায়। এভাবে একটি কর্মী মৌমাছি কিছু সময় বা দিনের জন্য পুষ্পের সেই বিশেষ আকৃতির প্রতি অভ্যস্ত হয়ে উঠে এবং এখানে-সেখানে বিস্তৃত স্থানে বিচরন করে না। তা সাহায্য করে বিশেষ উদ্ভিদকে খুঁজে নিতে। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য বা চরিত্রকে পুষ্পের স্থিরতা বলা হয়। এই অন্তর্নিহিত চরিত্রটি নানা দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Clicky